অতিরিক্ত কম্পিউটার ব্যবহারের কুফল ও প্রতিকার

অতিরিক্ত কম্পিউটার ব্যবহারের কুফল ও প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এই আর্টিকেলটি পড়ুন। এটা সম্পর্কে জানা খুব দরকার। অতিরিক্ত কম্পিউটার ব্যবহারের কুফল ও প্রতিকার না জানলে আপনি ক্ষতির সম্মুখীন হবেন। এই লেখাটি পড়ে অতিরিক্ত কম্পিউটার ব্যবহারের কুফল ও প্রতিকার সম্পর্কে জানুন।

অতিরিক্ত কম্পিউটার ব্যবহারের কুফল ও প্রতিকার ব্যবস্থা এখানে তুলে ধরা হবে। মনোযোগ দিয়ে পড়ুন এবং জেনে নিন- অতিরিক্ত কম্পিউটার ব্যবহারের কুফল ও প্রতিকার।

পেজ সূচি:

ভূমিকা:

যারা নিয়মিত কম্পিউটারে কাজ করেন, তারা কম্পিউটার মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে বিভিন্ন রকমের ক্ষতির বা শারীরিক জটিলতার সম্মুখীন হতে পারেন। অতিরিক্ত কম্পিউটার ব্যবহারের কুফল ও প্রতিকার সম্পর্কে না জানলে হয়তো অনেক দেরী হয়ে যাবে, আপনি মারাত্মক সমস্যার মধ্যে পড়বেন। তাই এই লেখাটি পড়ে অতিরিক্ত কম্পিউটার ব্যবহারের কুফল ও প্রতিকার সম্পর্কে ভালো করে জেনে নিন।

অতিরিক্ত কম্পিউটার ব্যবহারের কুফল ও প্রতিকার সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা:

কম্পিউটার ছাড়া আজকাল কোন্ কাজটি হয়? বাড়ি থেকে শুরু করে অফিস, স্কুল, কলেজ সব জায়গায় কম্পিউটারের কোনো না কোনো রোল থাকবেই। অধিকাংশ কাজ কম্পিউটারেই করা হয়। দৈনন্দিন জীবনে কম্পিউটারের উপরে আমাদের এক ধরনের নির্ভরতা থাকে। তাই অতিরিক্ত কম্পিউটার ব্যবহারের কুফল ও প্রতিকার সম্পর্কে জানা এখন অপরিহার্য।

আরো পড়ুন: ১মিনিটের জন্য ল্যাপটপ নিয়ে আপনার যেসব ক্ষতি করা সম্ভব

অতিরিক্ত কম্পিউটার ব্যবহারের ফলে আপনি কী পরিমাণ শারীরিক ও মানসিক ঝুঁকির মধ্যে আছেন, তা হয়তো জানেন না। সেগুলো আপনাকে জানাতেই এই লেখাটির মূল টপিক হলো- অতিরিক্ত কম্পিউটার ব্যবহারের কুফল ও প্রতিকার।

বিশিষ্ট ফিজিওথেরাপিস্ট ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ মেহেরুন নেসা অতিরিক্ত কম্পিউটার ব্যবহারের ফলে আমাদের কি কি ক্ষতি হতে পারে, সেরকম কিছু পয়েন্ট তুলে ধরেছেন। তাঁর সেই পয়েন্টগুলোকে সামনে রেখেই আজকে আমরা অতিরিক্ত কম্পিউটার ব্যবহারের কুফল ও প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো।

অতিরিক্ত কম্পিউটার ব্যবহারের কুফল:

অতিরিক্ত কম্পিউটার ব্যবহারের কুফল ও প্রতিকার শীর্ষক এই পোস্টটিতে এবার আমরা জানবো অতিরিক্ত কম্পিউটার ব্যবহারের ক্ষতিকর দিকগুলো কি কি? চলুন জেনে নেয়া যাক-

১. ঘাড়, আঙ্গুল ও কাঁধে ব্যথা:

কম্পিউটারের সামনে দীর্ঘসময় বসে থাকার ফলে কাঁধ ব্যথা হয়ে যায়। মেরুদন্ডের নিচে ব্যথা হতে পারে। অনেক সময় ধরে দুই হাত স্থির রেখে শুধু মাউস দিয়ে কাজ করতে হয়। এর ফলে হাতের রক্ত সঞ্চালনে বাঁধা পায়। কব্জি ও আঙুলে কার্পাল টানেল সিনড্রোম দেখা দিতে পারে।

২. চোখে সমস্যা:

অতিরিক্ত কম্পিউটার ব্যবহারের কুফল ও প্রতিকার সম্পর্কে বলতে গেলে এই চোখকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। কারণ যারা কম্পিউটারে দিনভর কাজ করে, বিশেষ করে যারা ফ্রিল্যান্সার, তাদের দিনের তিন ভাগের দুই ভাগ কাটে কম্পিউটারের সামনে।

আরো পড়ুন: কম্পিউটার বা স্মার্টফোন স্ক্রিন থেকে ঠিক কতোটা দূরত্বে বসবেন

এত সময় কম্পিউটারের সামনে স্ক্রিনের খুব কাছে থাকার ফলে চোখে বিভিন্ন জটিলতার সৃষ্টি হয় যেটাকে বলে- 'কম্পিউটার ভিশন সিনড্রোম'। কম্পিউটার স্ক্রিন ও চোখের মধ্যে নূন্যতম ৬ মিটার দূরত্ব রাখা উচিৎ। কিন্তু এর চেয়ে কম হলে চোখে জ্বালাপোড়া, চুলকানি, চোখ শুকানোসহ আরো নানা সমস্যা দেখা দেয়।

৪. মাংস পেশীতে ব্যথা:

যারা একটানা অনেকক্ষণ কম্পিউটারে কাজ করেন, একটানা অনেক সময় বসে থাকার ফলে ঘাড়, হাত, কোমরের মাংস পেশীতে ব্যথা হতে পারে। এরকম দিনের পর দিন চলতে থাকলে এটা আরো জটিল সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে।

৫. মাথা ব্যথা:

অতিরিক্ত কম্পিউটার ব্যবহারের কুফল ও প্রতিকার ব্যবস্থা নিয়ে এখানে আলোচনা হচ্ছে। মনোযোগ দিতে লেখাটি পড়তে থাকুন। এবার বলবো মাথা ব্যথা নিয়ে। যেহেতু কম্পিউটারে অনেকক্ষণ একটানা কাজ করলে চোখের অনেক সমস্যা হয়। চোখ এবং ব্রেইনের মধ্যে ডিপ কানেকশন রয়েছে। তাই চোখের সমস্যা হলে অবশ্যই ব্রেইনে সেটার প্রভাব পড়বেই।

আরো পড়ুন: সঠিকভাবে কম্পিউটার বা ল্যাপটপ বন্ধ না করলে যা ঘটতে পারে

ব্রেইনের সেলগুলো অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করতে পারে। নিউরোনের উপরেও এর প্রভাব পড়ে। ব্রেইনে রক্ত চলাচলে বাঁধা পায়। ফলে প্রচণ্ড মাথা ব্যথা করতে পারে। তাই অতিরিক্ত কম্পিউটার ব্যবহারের কুফল ও প্রতিকার সম্পর্কে আগে থেকেই জানা খুব জরুরি।

৬. স্থূলতা বৃদ্ধি:

অতিরিক্ত কম্পিউটার ব্যবহারের ফলে আপনার শরীর মোটা হয়ে যেতে পারে। সবার ক্ষেত্রে এটা না হলেও অনেকের জন্য এটা মারাত্মক সমস্যা। কারণ দিনের একটা সিংহভাগ সময় কম্পিউটারের সামনে বসে থাকার ফলে শারীরিক মুভমেন্ট কম হয়। ফলে দেহের অতিরিক্ত কোলেস্টেরল, ফ্যাট বার্ন হতে পারে না। যার ফলাফল হতে পারে স্থূলতা।

৭. ডায়াবেটিস বৃদ্ধি:

একটু অবাক হচ্ছেন নাকি? হ্যাঁ, অতিরিক্ত কম্পিউটার ব্যবহারের ফলে ডায়াবেটিস বৃদ্ধি পেতে পারে। কিন্তু কিভাবে? সেটা জানতেই অতিরিক্ত কম্পিউটার ব্যবহারের কুফল ও প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত জানা গুরুত্বপূর্ণ।

অনেক সময় ধরে কম্পিউটারে কাজ করার ফলে শারীরিক কসরত হয় না। এর ফলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে যায়। আর রক্তে অতিরিক্ত গ্লুকোজ বাড়লে ডায়াবেটিস হবার সম্ভাবনা বেশি।

অতিরিক্ত কম্পিউটার ব্যবহারের কুফলের প্রতিকার:

অতিরিক্ত কম্পিউটার ব্যবহারের কুফল ও প্রতিকার ব্যবস্থা নিয়ে একটি বিশ্লেষণধর্মী আলোচনা তুলে ধরার চেষ্টা করছি। মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। এবার আমরা জানবো, প্রতিকার সম্পর্কে। অতিরিক্ত কম্পিউটার ব্যবহারের ফলে যেসব স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে আপনি পড়তে পারেন, সেগুলো থেকে যেভাবে বাঁচবেন-

  • কম্পিউটারের স্ক্রিন থেকে আপনার চোখ কমপক্ষে ৬০ থেকে ৭০ সেন্টিমিটার দূরে রাখুন।
  • একটানা ১০ মিনিটের বেশি স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকবেন না। স্ক্রিনের আলো চোখের জন্য সহনীয় রাখুন।
  • অন্ধকারে কম্পিউটার চালাবেন না, চেষ্টা করবেন যেনো লাইটের আলো কম্পিউটারের স্ক্রিনের আলোর চেয়ে কম ব্রাইট না হয়।
  • একটানা অনেকক্ষণ বসে কম্পিউটারে কাজ করবেন না। মাঝে মাঝে উঠে হাটবেন, এতে শরীরের মাংসপশী আরাম পায়।
  • মাউস দিয়ে কাজ করার সময় শুধু হাতের কব্জি ব্যবহার করবেন না। হাতের কনুই, কব্জি, আঙ্গুল সব একসাথে ব্যবহার করবেন।
  • কম্পিউটার অবশ্যই এমন স্থানে রাখবেন, যাতে আপনাকে উপরে তাকাতে না হয়। স্ক্রিনের অবস্থান থাকবে আপনার চোখের নিচে।
  • ঘাড় সোজা রেখে কম্পিউটারে কাজ করুন। এতে ঘাড়ে ব্যথা হবে না।

অতিরিক্ত কম্পিউটার ব্যবহারের কুফল ও প্রতিকার গুলো বিশ্লেষণ করলাম। আশা করি এর ভিতরে অনেক অজানা তথ্য খুঁজে পেয়েছেন।

শেষ কথা:

সবশেষে বলবো, সতর্ক থাকুন এবং সুস্থ থাকুন। অতিরিক্ত কম্পিউটার ব্যবহারের কুফল ও প্রতিকার সম্পর্কে জানুন। কম্পিউটারকে বাদ দেয়া সম্ভব না। এটা আমাদের দরকার। তবে অতিরিক্ত কম্পিউটার ব্যবহারের কুফল ও প্রতিকার সম্পর্কে ভালো করে জেনে এর ক্ষতিকর প্রভাব থেকে নিজেকে দূরে রাখতে পারবেন। (25957)

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url