এইচআইভি সম্পর্কে ভুল ধারণাগুলো কি কি
এইচআইভি সম্পর্কে ভুল ধারণাগুলো কি কি? অবশ্যই সতর্ক মানুষ হিসেবে আমাদের এ বিষয়গুলো জেনে রাখা উচিত। কারণ আমাদের মধ্যে বেশিরভাগ মানুষ রয়েছে যারা এইচআইভি সম্পর্কে ভুল ধারণাগুলো কি কি? এ বিষয়গুলো সম্পর্কে তেমন কোন ধারণা রাখি না। আজকের এই আর্টিকেলে এইচআইভি সম্পর্কে ভুল ধারণাগুলো কি কি? এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।
আপনি যদি এইচআইভি সম্পর্কে ভুল ধারণাগুলো কি কি? এ বিষয়ে জানতে চান তাহলে সম্পূর্ণ আর্টিকেল জুড়ে আমাদের সঙ্গে থাকুন। তাহলে চলুন আর দেরি না করে এইচআইভি সম্পর্কে ভুল ধারণাগুলো কি কি? বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
পেজ সূচিপত্রঃ এইচআইভি সম্পর্কে ভুল ধারণাগুলো কি কি
- এইচআইভি ভাইরাসের আক্রান্ত হওয়ার কারণ
- এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত রোগের লক্ষণ
- এইচআইভি সম্পর্কে ভুল ধারণাগুলো কি কি
- এইচআইভি ভাইরাস থেকে প্রতিরোধের উপায়
- শেষ কথা
এইচআইভি ভাইরাসের আক্রান্ত হওয়ার কারণ
আমরা বর্তমান সময়ে এইচআইভি এই ভাইরাস টি সম্পর্কে আমরা সকলেই এ বিষয়গুলো সম্পর্কে ধারণা রাখি। কারণ এইচআইভি ভাইরাস হলো মরণব্যাধি একটি ভাইরাস। এই ভাইরাসের কারণে এইডস রোগ হয়ে থাকে। কিন্তু আমাদের সমাজে এইচআইভি ভাইরাস সম্পর্কে বেশ কিছু ভুল ধারণা রয়েছে। এইচআইভি সম্পর্কে ভুল ধারণাগুলো কি কি? আমরা অনেকেই এই বিষয়গুলো জানি না।
আরো পড়ুনঃ বজ্রপাত থেকে রক্ষা পেতে করণীয়
১। এইচআইভি ভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার বেশ কিছু কারণ রয়েছে এগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো অনিরাপদ শারীরিক সম্পর্ক। কেউ যদি অনিরাপদ শারীরিক সম্পর্ক করে তবে সেটি একাধিক ব্যক্তির অথবা মহিলার সাথে তাহলে তার ক্ষেত্রে এইচআইভি ভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
২। যদি কারো শরীরে এইচআইভি ভাইরাস ইতিমধ্যে থাকে এবং তার শরীর থেকে রক্ত অন্য কোন ব্যক্তি শরীরে প্রবেশ করানো হয় তাহলে সেই ব্যাক্তির শরীরে এইচআইভি ভাইরাস প্রবেশ করে।
৩। একটি ইনজেকশন যদি একাধিক মানুষের শরীরে ব্যবহার করা হয় তাহলে একজনের শরীর থেকে অন্যজনের শরীরে এইচআইভি ভাইরাস প্রবেশ করতে পারে যার ফলে এ রোগ হয়ে থাকে।
৪। আধুনিক কিছু ওষুধ রয়েছে সাধারণত এই ওষুধগুলোর কারণে অনেক সময় মানুষের শরীরে এইচআইভি ভাইরাস আক্রমণ করতে পারে।
৫। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মানুষের রক্ত, লালা, বীর্য থেকেই এই ভাইরাস একজনের শরীর থেকে অন্য জনের শরীরে ছড়িয়ে পড়ে।
এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত রোগের লক্ষণ
এইচআইভি ভাইরাসের আক্রমণের ফলে আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের রোগ হয়ে থাকে। সাধারণত আমরা যদি এখান থেকে মুক্তি পেতে চাই তাহলে আমাদেরকে প্রথমেই এর রোগ গুলো নির্ণয় করতে হবে যার ফলে এইচআইভি ভাইরাসের আক্রমণের ফলে কোন ধরনের লক্ষণ প্রকাশ পায় এই লক্ষণগুলো জানতে হবে। এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত রোগের লক্ষণ উল্লেখ করা হলো।
১। এইচআইভি যদি আমাদের শরীরে প্রবেশ করে তাহলে এর প্রথম লক্ষণ হলো জ্বর। সাধারণত হালকা পরিমাণে জ্বর থাকা ধীরে ধীরে জ্বরের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়া এবং আরো বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেওয়া।
২। শরীর ক্লান্ত হয়ে যাওয়া এবং মাথা ব্যথা করা অন্যজন একটি প্রধান লক্ষণ। এইচআইভি ভাইরাস আক্রমণের ফলে আমাদের শরীরে বেশ কিছু সমস্যা দেখা যায় এগুলোর মধ্যে শরীর একটুতে ক্লান্ত হয়ে পড়ে এবং প্রচন্ড পরিমাণে মাথা ব্যথা হয়।
৩। এইচআইভি ভাইরাস আক্রমণের ফলে আমাদের ত্বকে ফুসকুড়ি দেখা দেয়। এইচআইভি ভাইরাস এর প্রাথমিক পর্যায়ে গলা ব্যথা তবে পোস্ট করি হয়ে থাকে সাধারণত এখান থেকে চুলকানি সমস্যা দেখা দিতে পারে।
৪। আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া। সাধারণত এইচআইভি ভাইরাস আমাদের শরীরে প্রবেশ করার পরে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয় যার ফলে আমাদের শরীরে একটুতেই বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়।
৫। বমি বমি ভাব এবং বমি হওয়া। এইচআইভি ভাইরাসের আরও একটি প্রাথমিক পর্যায়ের লক্ষণ হলো বমি বমি ভাব হওয়া এবং মাঝেমধ্যে বমি হওয়া। সাধারণত অনেক সময় ডায়রিয়ার মত সমস্যাগুলো দেখা দিতে পারে যার ফলে আমাদের শরীরে পানি শূন্যতা দেখা দেয়।
৬। রাতে ঘুম কম হওয়া অন্যতম একটি প্রধান লক্ষণ। সাধারণত আমাদের অনেকের রাতে ঘুম কম হয় কিন্তু এইচআইভি ভাইরাস আমাদের শরীরে আক্রান্ত করলে আমাদের রাতে ঘুম হওয়ার পরিমাণ আরো অনেক কমে যায়।
এইচআইভি সম্পর্কে ভুল ধারণাগুলো কি কি
কেউ যদি এইচআইভি রোগে আক্রান্ত হয় তাহলে সে অনেক বেশি আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। এটা স্বাভাবিক কিন্তু মানুষের মাঝে তখন অনেকগুলো ভুল ধারণা ছড়িয়ে পড়ে। তবে আমাদের মধ্যে বেশিরভাগ মানুষ এইচআইভি সম্পর্কে ভুল ধারণাগুলো কি কি? এ বিষয়ে সম্পর্কে তেমন কোন ধারণা রাখেনা। যেহেতু এটি একটি জটিল রোগ তাই অবশ্যই আমাদেরকে এইচআইভি সম্পর্কে ভুল ধারণাগুলো কি কি? সে সম্পর্কে আগে জেনে নিতে হবে।
আরো পড়ুনঃ ফেসবুক হ্যাক হওয়ার কারণ
১। অনেকেই মনে করে থাকে এইচআইভি একটি ছোঁয়াচে রোগ। কিন্তু আপনাদের সুবিধার্থে বলে রাখি যে এইচআইভি কোন ছোঁয়াচে রোগ নয়। তবে আগে মানুষের একটি বড় ভুল ধারণা ছিল এটি। তবে কালের বিবর্তনে সাধারণত এই ধারণা থেকে অনেকেই সরে এসেছে।
২। আমাদের এইচআইভি নিয়ে আরেকটি ভুল ধারণা আছে সেটি হল এইচআইভি পজিটিভ হলেই মৃত্যু অনিবার্য। কিন্তু এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল বর্তমানে আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থায় এই সমস্যার সমাধান পাওয়া গিয়েছে সাধারণত তাই কিছু নিয়ম কানুন মেনে চললেই এইচআইভি থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
৩। আমাদের মধ্যে বেশিরভাগ মানুষ মনে করে থাকে যাদের এইচআইভি ভাইরাসে আক্রমণ করেছে সাধারণত তাদের এইডস রোগ হবে। এই কথা সত্য যে এইচআইভি ভাইরাস থেকে এইডস রোগ হয়ে থাকে কিন্তু সকলের ক্ষেত্রে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলেই এইডস হবে এমনটা নয়।
৪। আমাদের সমাজে আরো একটি ভুল ধারণা আছে যেটি হলো এইচআইভি ভাইরাসে কেউ যদি আক্রান্ত হয় তাহলে সুস্থ সন্তান জন্ম দেওয়া সম্ভব নয়। তবে সঠিক সময় যদি গর্ভবতীর মায়ের চিকিৎসা করা হয় তাহলে এই রোগ সন্তানকে আক্রান্ত করবে না বলে অনেকেই মনে করে থাকে।
৫। অনেকেই মনে করে থাকে যে এখন আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা তাই এইচআইভি অল্পতেই ভালো হয়ে যাবে। সাধারণত এই সমস্যাকে তেমন কোন বড় সমস্যা মনে করে না। কিন্তু এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল বিশেষজ্ঞরা বলেন, সাধারণত এই ধরনের ফলেই বর্তমান প্রজন্মের অনেক মানুষ আক্রান্ত হয়।
৬। এইচআইভি ভাইরাস নিয়ে আরো একটি ভুল ধারণা হলো অনেকে মনে করে থাকে আক্রান্ত ব্যক্তিকে যদি মশা কামড় দেয় তাহলে মশার মাধ্যমে অন্য ব্যক্তিদের এই রোগ ছড়াতে পারে। এই ধারণাটি একটি ভুল ধারণা। মশার মাধ্যমে এ রোগ ছড়ায় না।
এইচআইভি ভাইরাস থেকে প্রতিরোধের উপায়
এইচআইভি ভাইরাসের এখনো তেমন কোনো নির্দিষ্ট ওষুধ বের করা হয়নি। তবে আপনি যদি চান তাহলে আপনার বেশ কিছু সতর্কতা অবলম্বন করে আপনি এই রোগ প্রতিরোধ করতে পারেন। সাধারণত আমরা এইচআইভি সম্পর্কে ভুল ধারণাগুলো কি কি? এই বিষয় সম্পর্কে জেনেছি এখন এইচআইভি ভাইরাস থেকে প্রতিরোধের উপায় গুলো জেনে নেওয়া যাক।
১। আপনি যদি এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনাকে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। এক্ষেত্রে আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে যেন আপনার কারণে পরিবারের অন্য সদস্যদের এ রোগ না হয়ে যায়।
২। এইচআইভি ভাইরাস ছড়িয়ে যাওয়ার অন্যতম একটি প্রধান কারণ হলো শারীরিক সম্পর্ক। তাই প্রতিবার শারীরিক সম্পর্ক করার সময় অবশ্যই নতুন কনডম ব্যবহার করুন।
৩। যদি আপনার এইচআইভি ভাইরাস থাকে তাহলে আপনার শারীরিক সম্পর্কের সঙ্গীকে আগে থেকেই এই বিষয়টি জানিয়ে দিন। না হলে আপনার অথবা তার ভুলে অপর ব্যক্তি আক্রান্ত হয়ে যেতে পারে।
৪। যদি আপনার শরীরে ইনজেকশন দেওয়ার প্রয়োজন হয় তাহলে পরিষ্কার ব্যবহার করা হচ্ছে কিনা এ বিষয়টি সঠিকভাবে নিশ্চয়তা করুন।
৫। আপনি যদি একজন গর্ভবতী মা হয়ে এইচআইভি রোগে আক্রান্ত হন তাহলে আপনাকে গর্ভাবস্থায় চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে পেতে করে আপনার শিশুর আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যায়।
এইচআইভি সম্পর্কে ভুল ধারণাগুলো কি কিঃ শেষ কথা
প্রিয় বন্ধুগণ আজকের এই আর্টিকেলে এইচআইভি ভাইরাসের আক্রান্ত হওয়ার কারণ, এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত রোগের লক্ষণ, এইচআইভি সম্পর্কে ভুল ধারণাগুলো কি কি? এইচআইভি ভাইরাস থেকে প্রতিরোধের উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। এখানে সচেতন নাগরিক হিসেবে আমাদের অবশ্যই এ বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে রাখতে হবে।
আরো পড়ুনঃ বজ্রপাতের সময় কোথায় থাকা উচিত
এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ এবং তথ্যমূলক আর্টিকেল নিয়মিত পড়তে আমাদের আর্টিকেলের সঙ্গে থাকুন। কারণ আমরা আমাদের ওয়েবসাইটের নিয়মিত এ ধরনের স্বাস্থ্য মূলক আর্টিকেল প্রকাশ করে থাকি। ২৫৪২৭
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url