ঠাকুরগাঁও কিসের জন্য বিখ্যাত - ঠাকুরগাঁও এর বিখ্যাত খাবার

আপনার কি কোন ধারণা আছে ঠাকুরগাঁও কিসের জন্য বিখ্যাত এ বিষয়ে। যদি ধারণা না থেকে থাকে যে ঠাকুরগাঁও কিসের জন্য বিখ্যাত তাহলে আজকের আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ না পড়ে যাবেন না। কারণ আজকের আর্টিকেল থেকে আপনি এ বিষয়ে সম্পূর্ণ ধারণা পাবেন যে ঠাকুরগাঁও কিসের জন্য বিখ্যাত।
ঠাকুরগাঁও কিসের জন্য বিখ্যাত - ঠাকুরগাঁও এর বিখ্যাত খাবার

তাহলে চলুন ঠাকুরগাঁও কিসের জন্য বিখ্যাত এ সম্বন্ধে বিস্তারিত তথ্য জেনে নেওয়া যায়। আজকের আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।

পোষ্ট সূচিপত্র: ঠাকুরগাঁও কিসের জন্য বিখ্যাত - ঠাকুরগাঁও এর বিখ্যাত খাবার

ভূমিকা

ঠাকুরগাঁও বাংলাদেশের উত্তর পশ্চিম দিকে অবস্থিত একটি জেলা। এটি রংপুর বিভাগের একটি অংশ এবং পশ্চিম ভারতের সীমান্তে রয়েছে। ঠাকুরগাঁও জেলার আদি নাম ছিল নিশ্চিন্তপুর। ঠাকুরগাঁও জেলার মোট আয়তন ৪০.৫৭ বর্গ কিলোমিটার এবং মোট জনসংখ্যা ৯৩,২১৩ জন। ঠাকুরগাঁও টাঙ্গন নদীর তীরে অবস্থিত। ঠাকুরগাঁও শহরের বহু ইতিহাস ও ঐতিহ্য রয়েছে। তাই এই শহর নিয়ে নানান মানুষ নানান ধরনের ঐতিহাসিক ঘটনা ও কাহিনী গুলো জানার আগ্রহ রাখে।

যেমন: ঠাকুরগাঁও কিসের জন্য বিখ্যাত, ঠাকুরগাঁও এর দর্শনীয় স্থানগুলো কি কি আবার অনেকে জানতে চাই ঠাকুরগাঁও এর বিখ্যাত খাবার গুলো কি কি। এ ধরনের প্রশ্ন মানুষের মনে আসে যা তারা বিভিন্ন গুগল সাইট থেকে এ ধরনের তথ্য গ্রহণ করে থাকে। যেন তারা এই সমস্ত ঐতিহাসিক স্থান গুলোতে পরিদর্শ করে আনন্দ উপভোগ করতে পারে এবং বিভিন্ন ধরনের ঐতিহ্যবাহী খাবারের স্বাদ গ্রহণ করতে পারে।

ঠাকুরগাঁও কিসের জন্য বিখ্যাত

আমাদের মধ্যে অনেকেই এমন প্রশ্ন করে থাকি যে ঠাকুরগাঁও কিসের জন্য বিখ্যাত। সাধারণত এ ধরনের প্রশ্ন তারাই করে যারা ভ্রমণ প্রেমী বা বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করতে বা পরিদর্শন করতে পছন্দ করে। তারা বিভিন্ন শহর বা জেলার বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থান ঐতিহাসিক খাবার বা বিখ্যাত ব্যক্তি সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে থাকে। তাই আজ আপনাদের সাথে আলোচনা করবো ঠাকুরগাঁও কিসের জন্য বিখ্যাত সে সম্পর্কে। বিভিন্ন শিল্পকারখানার জন্য ঠাকুরগাঁও বিখ্যাত। ঠাকুরগাঁওয়ের যতগুলো বিখ্যাত শিল্প কারখানা রয়েছে তার মধ্যে ঠাকুরগাঁওয়ের চিনিকল অন্যতম।
এছাড়াও রয়েছে বেসিক শিল্প নগরী সেখানে কিছু কারখানা রয়েছে। যেমন: বিস্কুট ফ্যাক্টরী, সাবান ফ্যাক্টরী, প্লাস্টিক কারখানা, ফ্লাওয়ার মিল, জুটমিল ইত্যাদি। ঠাকুরগাঁওয়ের চিনিকল: বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের রংপুর বিভাগের ঠাকুরগাঁও জেলার সদর উপজেলার প্রধান সড়কে এই শিল্প কারখানাটি অবস্থিত। এই চিনিকলটি নির্মাণ কাজ শুরু করা হয় ১৯৫৬ সালে। আর এই চিনি কলটির নির্মাণ কাজ শেষ করা হয় ১৯৫৮ সালে। আর এই কারখানাটিতে চিনি উৎপাদন করা শুরু করে ১৯৫৮ - ৫৯ সাল থেকে।

প্রতিষ্ঠা কালীন সময় থেকে এ মিলে দৈনিক আখ মারায় করার ক্ষমতা ছিল ১.০১৬ মেট্রিক টন। আর বার্ষিক চিনি উৎপাদন ক্ষমতা ছিল ১০.১৬০ মেট্রিক টন। তবে পরবর্তী সময়ে ১৯৬৬ - ৬৭ সাল থেকে আখ মাড়াই এর ক্ষমতা বৃদ্ধি করে দৈনিক ১.৫২৪ মেট্রিক টন এবং বার্ষিক চিনি উৎপাদনের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় ১৫.২৪০ মেট্রিক টন করা হয়। এছাড়াও ঠাকুরগাঁও অঞ্চলে রয়েছে বহু ঐতিহাসিক স্থান এবং জমিদারদের ইতিহাস যা ঠাকুরগাঁও অঞ্চলকে বিখ্যাত বলে আখ্যায়িত করে। যেমন: রাজা টংকনাথের ইতিহাস ও ঐতিহ্য।

রাজা টংকনাথ চৌধুরী ইংরেজ শাসনামলে বর্তমান বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও জেলার রাণীশংকৈল উপজেলায় অবস্থিত মালদুয়ার পরগনার একজন জমিদার ছিলেন। তার পিতার নাম ছিল বুদ্ধিনাথ চৌধুরী। রাজা টংকনাথ চৌধুরী বহুমাত্রিক সমাজ কল্যাণ ও জনসেবামূলক কর্মকাণ্ডের স্বীকৃতি স্বরূপ তিনি চৌধুরী ও রাজা উপাধিতে ভূষিত হন।

রাজা টংকনাথ ১৮৯০ সালে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৪৮ সালে মৃত্যুবরণ করেন। রাজা টংকনাথ চৌধুরী খুব বড় মাপের জমিদার না হলেও তার অভিজাত্যের কমতি ছিল না। ১৯২৫ সালের ১৮ই নভেম্বর তৎকালীন ব্রিটিশ গভর্নর হাউসে টংকনাথ চৌধুরীকে ব্রিটিশ সরকার চৌধুরী উপাধিতে ভূষিত করেন।

ঠাকুরগাঁও এর বিখ্যাত খাবার

ঠাকুরগাঁও এমন একটি শহর যে শহরে শুধু বিখ্যাত ব্যক্তি বা বিখ্যাত দর্শনীয় স্থানই নয় এ শহরে রয়েছে বহু বিখ্যাত খাবারও। আমাদের অনেক সময় এ বিষয়ে জানতে আগ্রহী থাকে যে ঠাকুরগাঁও কিসের জন্য বিখ্যাত বা ঠাকুরগাঁও এর বিখ্যাত খাবার কি কি এই সম্বন্ধে। ঠাকুরগাঁও এর বিখ্যাত খাবার গুলো সম্বন্ধে নিচে আলোচনা করা হলো:
  • লোককথায় প্রচলিত রয়েছে যে ঠাকুরগাঁও এর বিখ্যাত খাবার গুলোর মধ্যে সবচেয়ে অন্যতম খাবার হচ্ছে কালাই রুটি।
  • ঠাকুরগাঁও এর বিখ্যাত খাবার গুলোর মধ্যে আরেকটি অন্যতম খাবার হচ্ছে আখের গুড়। ঠাকুরগাঁওয়ের আখের গুড় খেতে খুবই সুস্বাদু।
  • ঠাকুরগাঁওয়ের নদীতে প্রচুর পরিমাণে মাছ উৎপন্ন হয়। তাই ঠাকুরগাঁও মাছের জন্য বিখ্যাত।
  • ঠাকুরগাঁও আচারের জন্য বিখ্যাত।
  • এ সকল খাবার ছাড়াও ঠাকুরগাঁওয়ে আরো কিছু ঐতিহ্যবাহী খাবার হচ্ছে পেলকা, মাছের মাথা দিয়ে ঘাটি, খেসারি কালাই এর বড়া, কচু পাতা আর দেশি মাছের শুটকি দিয়ে তৈরি করা শিদল, চালের গুঁড়ায় সোডায় রান্না করা খাবার বা সোডা দিয়ে রান্না করা ফোকতাই। এছাড়াও আরও আছে সবজিতে সোডা দিয়ে রান্না করা ছ্যাকা এ ধরনের খাবারগুলি ঠাকুরগাঁওয়ের রন্ধন প্রণালীর বিশেষ ঐতিহ্য।

ঠাকুরগাঁও এর দর্শনীয় স্থান

আপনার মনে যদি প্রশ্ন আসে যে ঠাকুরগাঁও কিসের জন্য বিখ্যাত তাহলে আপনি এক কথায় বুঝে নিতে পারেন যে ঠাকুরগাঁও এর দর্শনীয় স্থানগুলির জন্য ঠাকুরগাঁও বিখ্যাত। ঠাকুরগাঁও এর দর্শনীয় স্থানগুলি নিচে আলোচনা করা হলো:
  • জগদল রাজবাড়ি: ঠাকুরগাঁও জেলার রাণীশংকৈল উপজেলার নেকমরদ থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে জগদল নামক স্থানে জগদল রাজবাড়ী অবস্থিত। অনেকে ধারণা করেন যে, অনুমানিক ঊনবিংশ শতাব্দীর মধ্যে ভাগে জগদলের রাজকুমার শ্রী বীরেন্দ্র কুমার নাগর তীরনই নদী মোহনায় এই রাজবাড়ীটি তৈরি করেন।
  • জামালপুর জমিদার বাড়ি জামে মসজিদ: ঠাকুরগাঁওয়ের জামালপুর ইউনিয়নে রয়েছে ঐতিহাসিক জামালপুর জমিদার বাড়ি। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন তাজপুর পরগনার রওশন আলীর বংশধর জামাল উদ্দিন এই অঞ্চলের জমিদারিত্ব পান। তিনি ১৮৬২ সালে জমিদার বাড়ির ভিত প্রস্থর স্থাপন করেন। কিন্তু জমিদার বাড়ি নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার পূর্বেই ১৮৬৭ সালে জমিদার বাড়ির সাথে একটি মসজিদে নির্মাণ কাজ শুরু করেন। মসজিদের নাম রাখা হয় জামালপুর জমিদার বাড়ি জামে মসজিদ।
  • শালবাড়ি মসজিদ বা ইমামবাড়া: ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা থেকে ২০ কিলোমিটার পশ্চিমে ভাউলার হাটের কাছে ঐতিহাসিক শালবড়ি মসজিদ অবস্থিত। শালবাড়ি মসজিদ থেকে প্রাপ্ত শিলালিপি তথা অনুসারে ১২১৫ বঙ্গাব্দে এই মসজিদটি নির্মাণ করা হয়।
  • হরিণমারী শিব মন্দির: ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে হরিণমারি হাটের ওপর প্রায় ৪০০ বছর প্রাচীন হরিণবাড়ি শিব মন্দির অবস্থিত।
  • ঢোলরহাট মন্দির: ঠাকুরগাঁও শহর থেকে ৯ কিলোমিটার দূরে রুহিয়া যাওয়ার পথে ঢোলের হাট নামক স্থানে ঢোলরহাট মন্দির অবস্থিত। ঠাকুরগাঁও শহর থেকে বাসে বা ইজিবাইকে এই মন্দিরে যাওয়া যায়।
  • বালিকা উদ্যান বা কুমিল্লা হাড়ি বিনোদন কেন্দ্র ও পিকনিক স্পট: ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা পরিষদের দক্ষিণ পূর্বে প্রায় ৬.০০ কিলোমিটার দূরে জগন্নাথপুর ইউনিয়নে বালিকা উদ্যান বা কুমিল্লা হাড়ি বিনোদন কেন্দ্র ও পিকনিক স্পটটি অবস্থিত।

শেষ কথা

উপরিউক্ত আর্টিকেলে আজ আপনাদের সাথে আলোচনার মুখ্য বিষয় ছিল ঠাকুরগাঁও কিসের জন্য বিখ্যাত এ সম্বন্ধে। আশাকরি আজকের আর্টিকেলটি পড়ে ঠাকুরগাঁও কিসের জন্য বিখ্যাত এই সম্বন্ধে আপনারা বিস্তারিত তথ্য পেয়েছেন। আজকের আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা ঠাকুরগাঁও সম্বন্ধে কতটুকু তথ্য অর্জন করতে পেরেছেন এবং কোন কোন বিষয়গুলো আপনাদের ভালো লেগেছে এ বিষয়ে আপনার মূল্যবান মতামত অবশ্যই শেয়ার করুন। এমনই গুরুত্বপূর্ণ ও শিক্ষনীয় আর্টিকেল প্রতিদিন পেতে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন। এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। 26181

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url